ফরিদপুরে মাদরাসা শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটালেন শিক্ষক!

 


ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় রাজ মোল্যা (৯) নামে এক শিশু শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে মো. ওয়ালিউল্লাহ (৪০) নামে এক মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আহত শিশু শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়া হয়েছে।


রোববার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে পৌরসভার বাকাইল মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শিক্ষক মো. ওয়ালিউল্লাহ পার্শ্ববর্তী বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবার।  

জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার কোমড়াইল গ্রামের মো. মোকাদ্দেছ মোল্যার ছেলে রাজ মোল্যা বাকাইল মাদরাসায় নূরানী বিভাগের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী।


মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর ট্রাংকের তালা ভেঙে কে বা কারা খাবার খেয়েছে। এই অভিযোগ পেয়ে শিক্ষক ওয়ালিউল্লাহ্ রাজকে সন্দেহ করে একটি কক্ষে নিয়ে যায়। এরপর ওই কক্ষের দরজা-জানালা বন্ধ করে তাকে বেত্রাঘাত করে। পরে রাজ মাদরাসার পাশে তার বোনের বাড়িতে পালিয়ে গিয়ে ঘটনাটি পরিবারকে জানায়। এরপর পরিবারের সদস্যরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।  

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা রেহেনা বেগম বলেন, 'আমার ছেলেকে হাফেজ বানানোর জন্য মাদরাসায় দিয়েছি। তাকে তো মেরে ফেলার জন্য দেইনি। আমার ছেলের সারা শরীরে বেতের আঘাতের চিহ্ন। হুজুর আমার ছেলেকে দরজা-জানালা বন্ধ করে মারছে। এভাবে শিক্ষক কোনো ছাত্রকে মারতে পারে না। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।

এ বিষয়ে রাজ বলে, আমি কারও ট্রাংকের তালা ভাঙিনি। কিন্তু হুজুর আমারে তারপরও অনেক মারছে। আমি হুজুরের পা ধরেও বলছি আমারে মাইরেন না, তারপরও মারা বাদ দেই নাই। '

জানতে চাইলে অভিযুক্ত মাদরাসা শিক্ষক ওয়ালিউল্লাহ মারধরের কথা স্বীকার করে বলেন, ওই ছাত্র মাদরাসার অপর এক ছাত্রের ট্রাংকের তালা ভেঙে খাবার খেয়েছে। তাই তাকে মারধর করা হয়েছে।

মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান টিপু জানান, ভাবে মারধর করা ঠিক হয়নি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পরিচালনা কমিটি মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. সিলভিয়া আশরাফী মিতা বলেন, শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেত্রাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আলফাডাঙ্গা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post
কপিরাইট © 365 Newspaper সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত™ | ডিজাইনার MOMINEXE