ফেনী-মিরসরাই সীমানায় ফেনী নদীর কলমিরচর এলাকায় বালু উত্তোলন নিয়ে দ্বন্দ্ব ও গোলাগুলির ঘটনায় বারইয়ারহাট পৌরমেয়র রেজাউল করিম খোকনসহ ২২ জনকে আসামি করে পাল্টা মামলা করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোনাগাজী আমলী আদালতে হাজির হয়ে এ মামলা করেন ফাজিলপুরের নুরুল আলম নামে এক ব্যক্তি।
তিনি ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক রিপনের প্রতিষ্ঠান মেসার্স প্রত্যয় এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী বুলবুল আহমেদ সোহাগ।
তিনি জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পরবর্তী করণীয় নিশ্চিতে সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় বারইয়ারহাট পৌরমেয়র রেজাউল করিম খোকনকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নামোল্লেখ ও ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৪ অক্টোবর সকালে আসামিরা সংঘবদ্ধ হয়ে সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর মৌজায় ফেনী নদী থেকে ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক রিপনের ইজারা করা বালু মহাল থেকে জোরপূর্বক বালু উত্তোলন করতে থাকেন।
এতে চেয়ারম্যান রিপনের প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী এবং শ্রমিকরা বাধা দিলে তাদের লোহার রড, কাঠের লাঠি এবং হকস্টিক দিয়া এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকেন। এতে অনেকে মারাত্মক আহত হয়। এ সময় রেজাউল করিম খোকনের নির্দেশে আসামিদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ করে ও ভাঙচুর চালায়। তারা ৫টি নৌকায় ৩ লাখ টাকা মূল্যের ২৫ হাজার ফুট বালু এবং প্রত্যয় এন্টারপ্রাইজের নোঙর করা জাহাজ থেকে ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা মূল্যের ১৬টি ব্যাটারি খুলে নিয়ে যায়।
পরে স্থানীয় লোকজন মিলে তাদের ধাওয়া দিলে আসামিরা শ্রমিকদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে গুলিবর্ষণ করে তাদের সঙ্গে আনা বোর্ড, কার্টার এবং চোরাইকৃত জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
এর আগে, শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে সোনাগাজী-মিরসরাই সীমানায় ফেনী নদীর কলমির চর এলাকায় বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় বারইয়ারহাট পৌরমেয়র রেজাউল করিম, আওয়ামী লীগ নেতা অশোক সেন এবং যুবলীগ নেতা সাঈদ খানসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন।
এ ঘটনায় শনিবার সকালে ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুল হকসহ ১২ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন বারইয়ারহাট মেয়রের সহযোগী মিজানুর রহমান। এ ঘটনায় রোববার (১৬ অক্টোবর) উচ্চ আদালত থেকে ৬ সাপ্তাহের আগাম জামিন লাভ করেন রিপন চেয়ারম্যান।